সাবেক স্বামীকে ভরণপোষণ দেবেন চাকরিজীবী স্ত্রী; যুগান্তকারী নির্দেশ ভারতীয় হাইকোর্টের

সাধারণত বিচ্ছেদের পর স্ত্রীকে ভরণপোষণ দিয়ে থাকেন স্বামী। তবে তর্ক যেখানে সমতা ও আইনের সঠিক ব্যবহারের, সেখানে এর বিপরীত দিকটিও সমান গুরুত্ব বহন করে। ভারতের মুম্বাইয়ের হাইকোর্ট তেমনই একটি দৃষ্টান্তমূলক নির্দেশ জারি করেছে। এই নির্দেশ অনুসারে, বিচ্ছেদের পর অসুস্থ ও বেকার স্বামীকে প্রতিমাসে ভরণপোষণ পাঠাবেন পেশায় শিক্ষিকা এই নারী। ১৯৫৫ সালের হিন্দু বিবাহ আইন অনুযায়ী এই নির্দেশ দেন আদালত। খবর হিন্দুস্তান টাইমসের।

১৯৯২ সালে বিয়ে হয় ওই দম্পতির। তাদের একটি কন্যাসন্তান রয়েছে। ২০১৫ সালে আদালতে দম্পতির বিবাহবিচ্ছেদের পর মেয়েটি মায়ের কাছেই থাকে। এরপরই ভরণপোষণের দাবি করে আদালতে মামলা করেন ওই স্বামী। তার দাবি ছিল, স্ত্রীর জন্য নিজের সমস্ত উচ্চাশা ছেড়েছেন তিনি। স্ত্রীর পাশে থেকে ঘর সামলেছেন। তবে এখন তিনি অসুস্থ হওয়ায় কোনো উপার্জন নেই। তার নামে কোনও স্থাবর বা অস্থাবর সম্পত্তিও নেই। অন্যদিকে স্ত্রী নানাভাবে তাকে হেনস্থা করে, অসদুপায়ে বিচ্ছেদ নিয়েছেন।

তিনি আরও জানান, ওই শিক্ষিকা মাসে ৩০ হাজার রুপি বেতন পান। নিজের নামে স্থাবর সম্পত্তিও রয়েছে। ফলে আইন অনুযায়ী, ভরণপোষণের আবেদন করেন ওই ব্যক্তি।

তার এই মামলার জেরে, ২০১৭ সালে মহারাষ্ট্রের নান্দেড়ের নিম্ন আদালত ওই নারীকে প্রতিমাসে তিন হাজার রুপি করে স্বামীকে ভরণপোষণ দেয়ার নির্দেশ দেয়। নির্দেশ না মানায় ২০১৯ সালে আদালত আর একটি নির্দেশনা জারি করে। তাতে ওই নারীর স্কুলের প্রধান শিক্ষককে বলা হয়, শিক্ষিকার বেতন থেকে ৫ হাজার টাকা করে প্রতি মাসে কেটে নিয়ে তা আদালতে জমা করতে। ২০১৭ সালের নির্দেশের পর বকেয়া হিসাবে ওই টাকা তার স্বামীর প্রাপ্য।

পরে নিম্ন আদালতের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে মুম্বাইয়ের হাই কোর্টে মামলা করেন এই শিক্ষিকা। তাতে হাইকোর্টের ঔরঙ্গাবাদ বেঞ্চ সাবেক স্বামীকে ভরণপোষণের অর্থ দেয়ার নির্দেশই বহাল রাখে। তাই প্রতি মাসে সাবেক স্বামীকে ৩ হাজার রুপি করে পাঠাতে হবে এই নারীর।